ফিলিস্তিনি স্বীকৃত রাষ্ট্র হলে গাজা মেরিন গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা নিশ্চিত হবে

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » ফিলিস্তিনি স্বীকৃত রাষ্ট্র হলে গাজা মেরিন গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা নিশ্চিত হবে
রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫



ফিলিস্তিনি স্বীকৃত রাষ্ট্র হলে গাজা মেরিন গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা নিশ্চিত হবে

ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলে গাজা উপকূলের গাজা মেরিন গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের বৈধ অধিকার ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের হাতে নিশ্চিত হবে। এমনটাই বলছেন প্রকল্পটির প্রাথমিক পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ মাইকেল ব্যারন। তার নতুন বই অনুযায়ী, এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে বর্তমান বাজারদরে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার আয় হতে পারে। ১৫ বছরে কমপক্ষে ১০০ মিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ রয়েছে এখান থেকে, যা ফিলিস্তিনিদের বিদেশি সাহায্যনির্ভরতা কমিয়ে নিজস্ব অর্থনৈতিক ভিত্তি গড়তে সহায়তা করবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন গার্ডিয়ান।

১৯৯০-এর দশক থেকেই এই গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের পরিকল্পনা চলছে। কিন্তু মালিকানা ও আইনি বিতর্কে কাজ থমকে আছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিনি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর পক্ষে আইনজীবীরা ইতালির রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ইএনআই’কে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেন যে, ইসরাইলের জ্বালানি মন্ত্রণালয় যে ‘জোন জি’এলাকায় ছয়টি লাইসেন্স দিয়েছে, তার শতকরা ৬২ ভাগ ফিলিস্তিনের দাবিকৃত সামুদ্রিক এলাকায় পড়ে। তাদের মতে, ইসরাইলের এসব লাইসেন্স বৈধ নয় এবং ইএনআই-এরও এসব অধিকার বৈধভাবে অর্জনের সুযোগ নেই।

ফিলিস্তিন ২০১৫ সালে জাতিসংঘ সমুদ্র আইন কনভেনশনে যোগ দিয়ে তাদের সামুদ্রিক সীমা ও একচেটিয়া অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণা করে। ইসরাইল ইউএনসিএলওএসের সদস্য নয়। ব্যারনের মতে, তেল কোম্পানির নিবন্ধিত দেশগুলো যদি ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়, তাহলে আইনি অনিশ্চয়তা দূর হবে। ফিলিস্তিন পাবে নতুন রাজস্ব উৎস ও ইসরাইলের বাইরে স্বাধীন জ্বালানি সরবরাহ।

গ্লোবাল উইটনেস দাবি করেছে, গাজা উপকূলের সমান্তরাল চলা ইস্ট মেডিটারেনিয়ান গ্যাস পাইপলাইন অবৈধ। কারণ এটি ফিলিস্তিনের সামুদ্রিক জলসীমা অতিক্রম করছে অথচ ফিলিস্তিন কোনো রাজস্ব পাচ্ছে না। ৯০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাইপলাইন ইসরাইলের আশকেলন থেকে মিশরের আরিশে গ্যাস পরিবহন করে, যেখানে গ্যাস তরল আকারে রপ্তানির জন্য প্রস্তুত হয়।

ব্যারন বলেন, ১৯৯৩ সালের অসলো চুক্তি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে স্পষ্টভাবে তাদের জলসীমা, ভূগর্ভস্থ সম্পদ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের আইন প্রণয়ন ও লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতা দিয়েছে। এই প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ ইয়াসির আরাফাতের রাষ্ট্রগঠন পরিকল্পনার মূল অংশ ছিল।২০০০ সালে বৃটিশ গ্যাস গ্রুপ (বিজি গ্রুপ) ও ফিলিস্তিনি কনসোলিডেটেড কন্ট্রাক্টরস কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে গাজা মেরিনে গ্যাস আবিষ্কৃত হয়।

গাজা বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করে জ্বালানি সংকট নিরসনের পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ইসরাইলি আদালত জলসীমাকে কোনো দেশের নয় ঘোষণা করে। কারণ ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র নয় বলে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতা অস্পষ্ট ছিল। হামাস ২০০৭ সালে গাজা দখলের পর ইসরাইল প্রকল্প আটকে দেয়, যাতে রাজস্ব হামাসের হাতে না যায়। ফলে বিজি গ্রুপ প্রকল্প থেকে সরে দাঁড়ায়। ২০২৩ সালের জুনে ইসরাইল মিশরীয় প্রতিষ্ঠান ইজিএএস’কে গ্যাসক্ষেত্র উন্নয়নের অনুমোদন দেয়, তবে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ায় কাজ থেমে যায়। গাজা মেরিনের মজুত প্রায় ৩০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাস। ইসরাইলের নিজস্ব জলসীমায় ১০০০ বিলিয়ন ঘনমিটার গ্যাসের বেশি মজুদের তুলনায় এটি ক্ষুদ্র। কিন্তু ফিলিস্তিনের জন্য এটি একমাত্র উল্লেখযোগ্য জ্বালানি সম্পদ।

সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ এক প্রতিবেদনে বলেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতের রায় অনুযায়ী করপোরেশনগুলোকে ইসরাইলের দখলকে সমর্থনকারী যেকোনো কার্যক্রম থেকে সম্পূর্ণ ও শর্তহীনভাবে সরে আসতে হবে। তিনি বলেছেন, কোম্পানিগুলোর দায়িত্ব হলো ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণে সহায়তা করা, দখল বজায় রাখা নয়। ইসরাইল এই অবস্থান প্রত্যাখ্যান করেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২২:০৬:৫১   ১৪ বার পঠিত  




আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


ফিলিস্তিনি স্বীকৃত রাষ্ট্র হলে গাজা মেরিন গ্যাসক্ষেত্রের মালিকানা নিশ্চিত হবে
ইরান নতুন করে পরমাণু কেন্দ্র স্থাপন করলে তা ধ্বংস করা হবে: ট্রাম্প
তীব্র ক্ষুধার মধ্যে গাজায় হামলা জোরদারের ঘোষণা ইসরাইলের
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্টকে গোঁড়ালিতে নজরদারি ট্যাগ পরার আদেশ
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে সিরিয়া-ইসরাইল
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও রুপার্ট মারডকের বিরুদ্ধে ১০ বিলিয়ন ডলারের মানহানি মামলা ট্রাম্পের
‘ডেথ সেলে’ অমানবিক জীবন কাটাচ্ছেন ইমরান, দাবি পিটিআইয়ের
সিরিয়াকে বিভক্ত হতে দেবে না তুরস্ক: এরদোগান
বাংলাদেশের নেতাদের আশ্রয় প্রসঙ্গে মমতা ভারত সরকার এখানে অনেক অতিথি এনে রেখেছে
ফ্রান্সে ৪০ বছর কারাভোগের পর এক ফিলিস্তিনপন্থী যোদ্ধাকে মুক্তির নির্দেশ

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ