
স্বপন বিশ্বাস, রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীতে সোনালী ব্যাংকের হেস অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা সোনালী ব্যাংকের এক গ্রাহকদের ওটিপি সংগ্রহ করে ৮লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে। কুখ্যাত এই অনলাইন প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (২০এপ্রিল) প্রেস রিলিজ এর মাধ্যমে জানাগেছে, গত শনিবার (১৯এপ্রিল) ভোরে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে। সেই সাথে তাদের হেফাজত হইতে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত সিম নং-০১৬০৭-৩১৫৩৯৪, ০১৯৫৯-৩৯২৩৭৯ সহ ০৪টি স্মার্টফোন, ২টি বাটন ফোন এবং ১৬টি বিভিন্ন অপারেটরের সিম কার্ড উদ্ধার করা পূর্বক জব্দ করা হয়। প্রাথমিক তদন্তে উক্ত আসামীগণ মামলার ঘটনায় জড়িত থাকার তথ্য প্রমান পাওয়া যাইতেছে। আসামীগণ আন্তঃজেলা প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। তাহারা মোবাইলে তথ্য প্রযুক্তির অপব্যবহার করিয়া নিজেদেরকে ব্যাংক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়া বিভিন্ন ব্যাংকের গ্রাহকদের নিকট হইতে ওটিপি নিয়া গ্রাহকের টাকা আত্মসাৎ করিয়া থাকে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, ফরিদপুর ভাঙ্গা থানার কালামৃধা ইউনিয়নের দুলকুন্ড গ্রামে অভিযান পরিচালনা করে এই গ্রামের মান্নান বেপারীর ছেলে মোঃ পান্নু বেপারী (২৯), একই থানার কালা মিয়া মাতব্বর এর দুই ছেলে, মোঃ রাজু মাতুব্বর (৩২, মোঃ সাজু মাতব্বর (২৮) এবং একই থানার উতলি (পাতরাইল দিঘিরপাড়) গ্রামের মোঃ কুদ্দুস তালুকদারের ছেলে মোঃ মাসুদ তালুকদার।
বিস্তারিত ঘটনায় জানাগেছে, গত ১৬এপ্রিল জেলার বালিয়াকান্দি থানার বহরপুর দাশপাড়া গ্রামের প্রতিভা রানী দাস নামে সোনালী ব্যাংকের এক গ্রাহকের কাছে সোনালী ব্যাংকের হেড অফিসের কর্মকর্তা পরিচয়ে কয়েকটি ফোন কল আসে।
ভুক্তভোগী প্রতিভা রানী দাস কল রিসিভ করতেই অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি নিজেকে সোনালী ব্যাংকের হেড অফিস, এর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে তাহার সাথে কথা বলিয়া কলটি কাটিয়া দেয়।
একই তারিখে অপর একজন অজ্ঞাত ব্যাক্তি +৮৮০৯৬৩৮৮৮৯৫২০ নম্বর থেকে ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল কলিয়া সোনালী ব্যাংকের একাউন্টের নমিনী সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তাহার নিকট হইতে তাহার এন আই ডি ও ছবি চায় সেই সাথে তাহার মোবাইল নম্বরে ওটিপি আসবে বলিয়া জানায়।
একই তারিখ ০৩.৪৮ ঘটিকা হইতে বেলা ০৪.২৩ ঘটিকার মধ্যবর্তী সময়ে একাধিক ওটিপি ভুক্তভোগী প্রতিভা রানী দাস এর মোবাইল আসিলে তিনি উক্ত ব্যাক্তিকে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা ভাবিয়া সরল বিশ্বাসে ওটিপি কোডগুলি তাহাদের জানাইয়া দেয়।
এরপর ভুক্তভোগীর ব্যাংক একাউন্ট হইতে ১,০০০০০/- +১,০০০০০/- +১,০০০০০/- +১,০০০০০/- +১,০০০০০/- +১,০০০০০/- +২,০০০০০/- = মোট ৮,০০০০০/- (আট লক্ষ) টাকা প্রতারকরা আত্মসাৎ করে নেয়।
এই ঘটনায় গত ১৮ এপ্রিল বালিয়াকান্দি মামলা রুজু করা হলে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মোছাঃ শামিমা পারভীন এর
তত্ত্বাবধানে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্), মোঃ শরীফ আল রাজীব,
সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) দেবব্রত সরকার এর নেতৃত্বে তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে বালিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনর্চাজ জামাল উদ্দিন এর সার্বিক সহযোগীতায় পুলিশের চৌকশ টিমের সদস্য এসআই(নিঃ) হিমাদ্রি হালদার, এসআই (নিঃ) আশিকুর রহমান, এএসআই (নিঃ) রুবেল ও ডিবি, রাজবাড়ী টিমের মাধ্যমে আসামীদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৬০৭-৩১৫৩৯৪ এর রেজিষ্ট্রেশন সংগ্রহ করিয়া দেখা যায় যে, সিমটি ছগির মিয়া এর নামে নিবন্ধিত রহিয়াছে এবং ০৯৬৩৮৮৮৯৫২০ নম্বরটি ব্রিলিয়ান্ট নাম্বার নামে পরিচিত যাহার মুল নম্বর ০১৯৫৯-৩৯২৩৭৯ যা বুলবুলি দাশ এর নামে নিবন্ধিত হইলেও উক্ত নাম্বারগুলো বর্তমান লোকেশন পাতরাইল দিঘিরপাড় গ্রেফতারকৃত আসামীরা ব্যবহার করেছে।
গ্রেফতার আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আত্মসাৎকৃত টাকা উদ্ধারে পুলিশি কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৭:৩৪ ৩১৮ বার পঠিত