
স্বপন বিশ্বাস, রাজবাড়ীঃ
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার নূরুল হক ওরফে নূরুল পাগলের বিতর্কিত কবরকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
কাবা শরীফের আদলে তৈরি এই কবরকে মাটি থেকে প্রায় ১২ ফুট উঁচুতে নির্মিত হয়েছে।
এছাড়াও নিজেকে তিনি ইমাম মাহদী দাবি করে ছিলেন।
এটা পবিত্র ইসলামিক শরিয়ত পরিপন্থী দাবি করে ফুঁসে উঠেছে তৌহিদী জনতা।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি হাফেজ মাওলানা মো. ইলিয়াস আলী মোল্লা বলেন, আশির দশকে ভণ্ড নূরুল পাগলা নিজেকে ইমাম মাহদী দাবি করেন।
তিনি পবিত্র কালেমা, আজান ও ধর্মীয় অনুশাসন বিকৃত করেছিলেন, তার দরবারে নামাজ ও দরুদ সঠিক পদ্ধতিতে পড়া হতো না।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, মৃত্যুর আগেই নূরুল কাবা শরীফের আদলে ১২ ফুট উঁচু একটি বেদি নির্মাণ করেন।
গত ২৩ আগস্ট তার মৃত্যু হলে সেই বেদির উপর বিশেষ কায়দায় তাকে দাফন করা হয়। এমনকি ধারণা করা হচ্ছে, তাকে দক্ষিণমুখী মাথা দিয়ে দাফন করা হয়েছে, যা শরিয়ত বিরোধী। এই ঘটনায় তৌহিদী জনতার আপত্তির মুখে উত্তেজনা এড়াতে প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হলেও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কবর নিচু করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, নূরুলের বড় ছেলে নূর তাজ খ্রিস্ট ধর্ম প্রচার করছেন এবং অনেক মুসলিমকে ধর্মান্তরিত করছেন, যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে। বক্তারা দাবি করেন, নূরুল পাগলের কবর পুনরায় কবরস্থানে দিতে হবে, অন্যথায় সেখানে ধর্মবিরোধী কার্যক্রম চলতে থাকবে। দাবি না মানলে তাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির এ্যাড. মো. নূরুল ইসলাম, ড. আবুল হোসেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চৌধুরী আহসানুল করিম হিটুল, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ রাজবাড়ী জেলা শাখার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামাদল রাজবাড়ী জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনাস খান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস রাজবাড়ী জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. ইউসুফ নোমানী, রাজবাড়ী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য সচিব মোবাইদুর রহমান মিরাজ, চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক মো. নাসির মিয়া, এনসিপির সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মামুন, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি মুফতি আবু তাহের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের রাজবাড়ী জেলা শাখার সহ-সভাপতি আ. গাফফার এবং ইমাম হাফেজ মাওলানা মো. আ. কুদ্দুস মিয়াসহ অন্যান্যরা।
সংবাদ সম্মেলন শেষে জেলা প্রশাসকের নিকট একটি স্মারকলিপিও প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যুর পর রাতেই দরবার শরীফ প্রাঙ্গণে নূরুল পাগলকে জানাজা শেষে উঁচু বেদিতে দাফন করা হয়। কাবার আদলে রং করা হলেও আন্দোলনের মুখে পরে সেই রং পরিবর্তন করা হয়, তবে কবর নিচে নামানো হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮:৩৫:০৪ ৩০ বার পঠিত