
যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯৭ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরাইল। এ সময়ে আহত হয়েছেন ২৩০ জন। পাশাপাশি ৮০ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এমন দাবি করেছে গাজা সরকারের মিডিয়া বিষয়ক দপ্তর। পাল্টা অভিযোগ ইসরাইলের। তাদের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে, হামাস যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। তার প্রতিক্রিয়ায় তারা বিমান হামলা চালিয়েছে। তাতেই বহু ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ওদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, গাজার যুদ্ধবিরতি এখনও কার্যকর আছে। যুক্তরাষ্ট্র নিশ্চিত করছে যেন পরিস্থিতি ‘খুব শান্তিপূর্ণ’ থাকে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ই অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরাইল গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬৮,১৫৯ জনকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১,৭০,২০৩ জন। অন্যদিকে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরাইলে ১,১৩৯ জন নিহত হয়। প্রায় ২০০ জনকে জিম্মি করে হামাস। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেন, হামাস নিরস্ত্র হয়েছে এটা নিশ্চিত করতে গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো প্রয়োজন। ওদিকে দখলকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসের কাছে ইসরাইল প্রায় ২৮.৩ হেক্টর (৭০ একর) ফিলিস্তিনি ভূমি দখল করেছে বলে জানিয়েছে কলোনাইজেশন অ্যান্ড ওয়াল রেজিসস্ট্যান্স কমিশন। মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন একটি ইসরাইলি বুলডোজার অনবিস্ফোরিত বোমার ওপর দিয়ে যাওয়ার ফলে দুই ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছে। এর জন্য হামাস দায়ী নয়। ট্রাম্পের উপদেষ্টা স্টিভ উইটকফ জানিয়েছেন, তিনি ও জারেড কুশনার গাজার যুদ্ধবিরতি আলোচনার সময় দোহায় ইসরাইলি বিমান হামলার ঘটনায় নিজেদের ‘প্রতারণার শিকার’ মনে করছেন।
ওদিকে প্যালেস্টাইন সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস শুক্রবারের এক ইসরাইলি হামলার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। এই হামলায় একই পরিবারের ১১ জন নিহত হন। তারা হলেন- সুফিয়ান শাবান, তার স্ত্রী সামার মোহাম্মদ নাসের শাবান। তাদের সন্তানরা- কারিম (১০), আনাস (৮), নাসমা (১২), ইহাব মোহাম্মদ নাসের আবু শাবান (৩৮), তার স্ত্রী রান্দা মাজেদ মোহাম্মদ শাবান (৩৬)। নাসের-রান্দা দম্পতির সন্তান- নাসের (১৩), জুমানা (১০), ইব্রাহিম (৬) ও মোহাম্মদ (৫)। ওই সংস্থা বলেছে, এই হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; বরং এটি ইসরাইলের পুনরাবৃত্তি করা এক ধরনের অপরাধ। যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও কামান ব্যবহার করে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে কোনো সামরিক প্রয়োজন ছাড়াই।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক প্রধান টম ফ্লেচার খান ইউনুস থেকে গাজা সিটিতে যাওয়ার পথে নিজের গাড়ি থেকে ধারণ করা একটি ভিডিও প্রকাশ করেছেন। ভিডিওতে দেখা যায়, চারদিকে কেবল ধ্বংসস্তূপ। পুরো এলাকা এক মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার কর্মী কেনেথ রথ ভিডিওটির প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের গণহত্যা কনভেনশন উদ্ধৃত করে বলেন, আজকের গাজা- একে ধ্বংস করার এক উপায় হলো এমন জীবনযাপনের শর্ত তৈরি করা যা কোনো গোষ্ঠীর অস্তিত্ব পুরোপুরি বা আংশিকভাবে ধ্বংস করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম আন্দোলনের নেতা ফিলিস্তিনের সংগ্রামের সঙ্গে সংহতি জানালেন ক্রিস স্মলস। তিনি আমাজন শ্রমিকদের সংগঠিত করার জন্য মার্কিন শ্রম আন্দোলনের অন্যতম আলোচিত নেতা। জুলাই মাসে ‘হান্দালা’ নামের একটি ত্রাণবাহী জাহাজে গাজায় সাহায্য পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:০৬ ৩৮ বার পঠিত