
দুদকের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আবুল বারকাতের জামিন নামঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত। অন্যদিকে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন অন্য আরেকটি আদালত।
শুনানিতে আদালত বলেছেন, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ট্রুথ কমিশন গঠন করা হয়েছিল। যারা দুর্নীতি করেছিল তারা ওই কমিশনে গিয়ে নিজেদের দুর্নীতির কথা স্বীকার করে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা দেয়। ভেবেছিলাম অন্তর্বর্তী সরকারের সময়েও এমন কিছু উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাচার করা টাকা এই সরকার ফেরত এনে রাষ্ট্রের কাছে জমা দেবে, কিন্তু সেটি হয়নি।
বুধবার সকালে জামিন শুনানিকালে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এসব কথা বলেন।
আদালত আরও বলেন, এখন দুদকের মতো সংস্থার পক্ষে এত এত দুর্নীতি বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। এছাড়া দুদক যেসব মামলা করে সেসব মামলায় শাস্তিও হয় কম। দুর্নীতি করে পাঁচ হাজার কোটি টাকার, শাস্তি হয় মাত্র পাঁচ বছরের। এরপর আবুল বারকাত ও দুদক প্রসিকিউটরকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, জনতা ব্যাংকের এলিগেশন আরও অনেক বড় থাকার কথা। তবে সব এলিগেশনের সঙ্গেই আপনি জড়িত এটি আমি বলছি না। আপনি ধৈর্য ধরুন। ব্যাংক বোর্ডের সহায়তায় বিদেশে অর্থ পাচার করেছে। এটা নজিরবিহীন। আমাদের দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে। এরপর আবুল বারকাতের জামিন নামঞ্জুর করেন তিনি। একই সঙ্গে এ মামলায় তার তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া আবেদনের শুনানির জন্য মামলাটি সিএমএম আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত।
আবুল বারকাতের পক্ষে এ সময় শাহিনুর রহমান রিমান্ডের বিরোধিতা করেন।
পরে আদালত আবুল বারকাতের বক্তব্য শুনতে চান। বারকাত বলেন, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে ২০০’র অধিক বোর্ড মিটিং করেছি। এর মধ্যে এই ঋণের বিষয়টা ছিল। পরে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকে এনওসি’র জন্য পাঠায়। এ মামলায় যাদের নাম বলা হচ্ছে তা প্রশ্নাতীত। ব্যাংকে যারা ছিল তাদের নাম শুনেছি, চিনি না। চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনকালে ২০১৩ সালে আমার সময় জনতা ব্যাংকের সর্বোচ্চ প্রফিট (লাভ) হয়েছে, সর্বোচ্চ গ্রোথ হয়েছে। আর বলা হচ্ছে আমি জনতা ব্যাংককে ডুবিয়েছি, সর্বনাশ করেছি। জেনেশুনে আমি কিছু করিনি। পরে আদালত বলেন, বিপুল পরিমাণ ঋণ জালিয়াতির ঘটনা। যে প্রপার্টির জন্য ঋণ দেওয়া হয়েছে তা খুব কম। এমন ঘটনা নজিরবিহীন। প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান হিসাবে তার অ্যাকশন নেওয়া দরকার ছিল। কিন্তু তিনি তা করেননি। তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হলো, যা পাঁচ কার্যদিবসে শেষ করতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১:১৪:৪৬ ১২ বার পঠিত