
সংগঠিত ও ব্যাপক নির্যাতনের এক ডি-ফ্যাক্টো রাষ্ট্রীয় নীতি অনুসরণ করছে ইসরাইল। এ বিষয়ে জাতিসংঘের কমিটি অ্যাগেইনস্ট টর্চারের কাছে প্রমাণ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। শুক্রবার প্রকাশিত কমিটির সর্বশেষ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে ইসরাইল হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে আটক করেছে বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন জানিয়েছে। যাদের অনেককে বেআইনিভাবে দীর্ঘ সময় পরিবার বা আইনজীবীর সঙ্গে সাক্ষাৎ ছাড়াই আটক রাখা হচ্ছে। অনেক পরিবার মাসের পর মাস ধরে জানতে পারেন না তাদের প্রিয়জন কোথায় আছেন। যা জাতিসংঘের ওই কমিটির মতে জোরপূর্বক গুম। কমিটি বলেছে, পুরো ফিলিস্তিনিদের- এমনকি শিশু, গর্ভবতী নারী ও প্রবীণদেরও অবৈধ যুদ্ধ আইনে ধরে রাখার ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
কমিটির উপস্থাপিত তথ্য অনুযায়ী, আটক ফিলিস্তিনিদের অনেকেই খাবার ও পানির অভাবে ভোগেন। মারধর, কুকুর দিয়ে আক্রমণ, বৈদ্যুতিক শক, ওয়াটারবোর্ডিং, যৌন সহিংসতা, দীর্ঘসময় শৃঙ্খলিত রাখা, টয়লেট ব্যবহার করতে না দেয়া এবং ডায়াপার পরতে বাধ্য করার মতো গুরুতর নির্যাতনের শিকার হন। কমিটি বলেছে, এসব আচরণ যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। আরও বলা হয়, এ ধরনের নির্যাতন আন্তর্জাতিক আইনে সংজ্ঞায়িত গণহত্যার উপাদানের অন্তর্ভুক্ত।
ইসরাইল এসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছে। কমিটির শুনানিতে ইসরাইলের রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মেরন অভিযোগগুলোকে ‘ভিত্তিহীন অপপ্রচার’ বলে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, এক সন্ত্রাসী সংগঠনের হুমকির মধ্যেও ইসরাইল নৈতিকতার ভিত্তিতে তার আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পালন করে। তবে কমিটি সদস্যরা তদন্ত না হওয়া বা দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি না করার প্রবণতা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন।
কমিটি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলার নিন্দা জানিয়েছে। পাশিপাশি ইসরাইলের নিরাপত্তা উদ্বেগ স্বীকার করেছে। তবে সতর্ক করে দিয়েছে- এক পক্ষের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন অন্য পক্ষকে নির্যাতন বৈধ করার অনুমতি দেয় না। আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত কনভেনশন অনুযায়ী, নির্যাতন যেকোনো পরিস্থিতিতেই নিষিদ্ধ।
একই দিনে জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতর জানায়, পশ্চিম তীরে দুই ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যার ঘটনার সারসংক্ষেপ মৃত্যুদণ্ডের মতো দেখায়। ভিডিওতে দেখা যায়, দুজনই হাত তুলে আত্মসমর্পণের চেষ্টা করছিলেন। অন্যদিকে গাজায় শীতের মধ্যে হাজারো মানুষ এখনো তাঁবুতে ঠাঁই নিয়েছে। যেখানে পর্যাপ্ত ত্রাণ ঢুকছে না।
বাংলাদেশ সময়: ০:০৭:৪৬ ৪১ বার পঠিত