
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ভাষণে সেই ভাঙা রেকর্ডটাই বাজিয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নতুন কোনো কথা নেই। হামাসকে দোষারোপ করার সেই চিরাচরিত সুর। ইরানকে শত্রু গণ্য করা। এর কোনোটাই নতুন কিছু নয়। এছাড়া ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া দেশগুলোর বিরুদ্ধে নিজের হতাশা ব্যক্ত করেছেন নেতানিয়াহু। এখানে সেই একই কথা। হাতাশ কণ্ঠে বলেন, স্বীকৃতি দিয়ে ইহুদিবিদ্বেষকে পুরস্কৃত করেছেন আপনারা। তার বক্তব্য না শুনে বহু দেশ অধিবেশন স্থল ত্যাগ করেন। এদিকে নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় নিউ ইয়র্কের রাস্তায় বিক্ষোভ করেন কয়েকশত মানুষ। তারা মজলুম ফিলিস্তিনের পতাকা উড়ান এবং যুক্তরাষ্ট্রকে তেল আবিবের জন্য সকল সহায়তা বন্ধের দাবি জানান। জাতিসংঘে নেতানিয়াহুর ভাষণ আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। এমন এক সময় তিনি সেখানে কথা বলেছেন যখন গাজায় নির্বিচারে নারী, শিশু তথা সর্বস্তরের মানুষের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তার বাহিনী।
স্কাই নিউজের খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় বিশ্ব নেতাদের সমালোচনা করেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী। নেতানিয়াহু বলেন, ৭ অক্টোবরের পর অনেক বিশ্ব নেতা ইসরাইল প্রশ্নে নতজানু হয়েছেন। তারা হেরে গেছেন। পক্ষপাতদুষ্ট মিডিয়ার কাছে মাথানত করেছেন। তার এই ভাষণের কয়েক দিন আগে বেলফোর ঘোষণার ১০৮ বছর পর ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বৃটেন। দেশটির সঙ্গে কানাডা, অস্ট্রেলিয়া এবং ফ্রান্সও এই স্বীকৃতি দিয়েছে। ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়া ইহুদিবিরোধীদের পুরস্কৃত করবে বলে হাতাশা ব্যক্ত করেন নেতানিয়াহু। যারা ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছে তাদের লক্ষ্য করে তিনি বলেন, সকল সরকার প্রধানদের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পকে অনুসরণ করা উচিত। কিন্তু তারা এই পথ অনুসরণ না করে ভিন্ন পথ অবলম্বন করেছেন। এর মাধ্যমে তারা মূলত ইহুদিবিদ্বেষকে পুরস্কৃত করেছেন। তার দাবি ৯০ শতাংশ ফিলিস্তিনি ৭ অক্টোবরের হামাসের হামলাকে সমর্থন করে। যারা ফিলিস্তিনকে সমর্থন করে তাদের জন্য আমার স্পষ্ট বার্তা হচ্ছে- আপনাদের সিদ্ধান্তকে যখন ‘বর্বর সন্ত্রাসীরা’ সমর্থন করছে তখন বুঝতে হবে আপনারা কিছু ভুল করছেন। আপনাদের এমন লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসীদের উৎসাহিত করছে। গাজায় হামলার বিষয়েও কথা বলেছেন নেতানিয়াহু। গাজায় হামলা বিষয়ক কয়েকটি সমালোচনা খণ্ডন করেন তিনি। যার মধ্যে রয়েছে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক হতাহত এবং তীব্র মানবিক সংকট। তার দাবি টেরর টানেল এবং টেরর টাওয়ার থেকে ইসরাইলে বারবার হামলা করা হয়েছে। এজন্য হামাসকে দায়ী করেন নেতানিয়াহু।
তার ভাষণের সময় নিউ ইয়র্কে কয়েকশত মানুষ বিক্ষোভে সমবেত হন। তারা ফিলিস্তিনের পতাকা উড়ান এবং দেশটির পক্ষে স্লোগান দেন। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইসরাইলের জন্য সবরকম সহায়তা বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে। ভাষণের পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে ইরান, হামাস, হিজবুল্লাহ এবাং হুতিকে শত্রু হিসেবে উল্লেখ করেন নেতানিয়াহু। এ সংক্রান্ত একটি কাগজ তুলে ধরেন তিনি। যেখানে উল্লিখিত দেশ এবং গোষ্ঠীর কথা লিখা ছিল। তিনি বলেন আমাদের শত্রুরা সবাই আমাদের ঘৃণা করে।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:১৭:১৮ ২১ বার পঠিত