
তালাকের ৪ বছর পর যৌতুকের মিথ্যা অভিযোগে স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করায় সাবেক স্ত্রী ইসরাত জেরিন খান প্রথমাকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত এ আদেশ দেন। তবে আপিলের শর্তে তিনি জামিন পেয়েছেন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, মিথ্যা অভিযোগে যৌতুকের মামলা করায় গত ২৪ মে আসামি ফরিদকে খালাস দেওয়া হয়। ওইদিন ইসরাত জেরিন খান প্রথমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। এদিন তিনি জবাব দাখিল করেন।
তবে জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আদালত মামলার বাদীকে সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ডণ্ড দেন। তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। তবে বাদী আপিল দায়েরের শর্তে জামিন আবেদন করেন। আদালত ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করার শর্তে তাকে জামিন দিয়েছেন।
এর আগে ২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি ইসরাত জেরিন খান প্রথমা স্বামী ফরিদ আহমদকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ফরিদ ও প্রথমা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বিয়ের সময় প্রথমার পরিবার ১০ লাখ টাকার স্বর্ণ এবং আসবাবপত্র বাবদ নগদ ১০ লাখ টাকা প্রদান করে। চাকরির সুবাদে ফরিদ আহমদ ফ্রান্সে চলে যান। প্রথমাকে বাবার বাড়িতে রেখে যান। কাজী নিপা নামে এক নারীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় ফরিদ। ২ আগস্ট বিষয়টি প্রথমা তার শ্বশুর আমিনুল হহককে জানান। তখন তার শ্বশুর বিশেষ প্রয়োজনে ৫০ লাখ টাকা চান।
কিসের টাকা জানতে চাইলে বলেন, যৌতুকবাবদ টাকা। প্রথমা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আমিনুল হক তাকে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন। বিষয়টি প্রথমা তার স্বামীকে জানায়। ফরিদও তার বাবার পক্ষ নেন।
টাকা না দিলে নিপাকে বিয়ের হুমকি দেন। প্রথমা তার শ্বশুড় বাড়িতে ফিরতে চায়। তবে টাকা না দিলে ফিরতে পারবে না মর্মে জানিয়ে দেয় তার শ্বশুড় এবং স্বামী। ২০২৩ সালের ২০ জানুয়ারি ফরিদ বাংলাদেশে আসেন। প্রথমা তার স্বামীর সঙ্গে দেখা করতে চান। তবে ফরিদ অস্বীকৃতি জানান। পরে প্রথমার খালার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়া বাসায় ২৫ জানুয়ারি বিকালে তারা দেখা করেন। সেখানে এসে ফরিদ প্রথমার কাছে ৫০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। না হলে অন্যত্র বিয়ে করা হুমকি দেয়। প্রথমা যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ফরিদ তাকে মারধর করে সেখান থেকে চলে যান।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। পরে আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তিনি।
পরে মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামির আত্মপক্ষ শুনানি, সাফাই সাক্ষ্য এবং যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে ফরিদ আহমদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় গত ২৪ মে আদালত তাকে খালাস দেন। বাদীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৫৯:৩৪ ৮ বার পঠিত