
ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে প্রায় ৬ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নৌ-পরিবহন অধিদপ্তরের সাবেক চিফ ইঞ্জিনিয়ার ড. এস এম নাজমুল হক ও তার স্ত্রী সাহেলা নাজমুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি তাদের বিরুদ্ধে এ চার্জশিট দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, সাহেলা নাজমুলের বিরুদ্ধে ২ কোটি ৬৬ লাখ ২১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের তথ্য গোপন এবং ৩ কোটি ২৫ লাখ ৯০ হাজার ১১৫ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ কারণে সাহেলার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬ (২) ধারায় এবং ২৭ (১) ধারায় চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া স্বামী ড. এস এম নাজমুল হক চাকুরিকালীন ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করার মানসে স্ত্রী সাহেলার নামে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব/ব্যবসা প্রতিষ্ঠান/যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ দেখিয়ে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর পূর্বক মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন। এ কারণে চার্জশিটে তাকেও আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ৫ কোটি টাকার বেশি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালে এ দম্পতির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। প্রাথমিকভাবে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় ২০২৩ সালের ৩০ জুলাই তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, নাজমুল হকের স্ত্রী সাহেলা নাজমুল ২০১৯ সালের ১৭ এপ্রিল সম্পদ বিবরণীতে ১ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ এবং ৮০ লাখ ২২ হাজার ২৫৩ টাকার অস্থাবর সম্পদ অর্জনের ঘোষণা দেন। তবে সম্পদ বিবরণী যাচাই ও অনুসন্ধানে কয়েকগুণ দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া যায়। যে কারণে মামলায় স্ত্রীকে প্রধান আসামি এবং স্বামী নাজমুলকে সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
দুদক সূত্র আরও জানায়, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও পাচার ছাড়াও প্রকাশ্যে ঘুষ গ্রহনের দায়ে কারাভোগ করেছিলেন এ দম্পতি। দুদকের একটি মামলায় আগাম জামিন চাইলে ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার একটি আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এছাড়া একই বছর তাদের দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪২:৫০ ১২ বার পঠিত