
ওয়াজেদ নবী, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জে ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের শিক্ষকদের কলেজে উপস্থিত থাকার জন্য অধ্যক্ষের কড়া নির্দেশ
গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে চলছে বিক্ষোভ। ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে পালন করা হচ্ছে সাধারণ ধর্মঘট। এদিকে কিশোরগঞ্জে ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজের শিক্ষকদের কলেজে উপস্থিত থাকার জন্য অধ্যক্ষের কড়া নির্দেশের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের এ নির্দেশের নোটিশ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন কিশোরগঞ্জ শহরের সকল শ্রেণির মানুষের কাছে নেশাখোর মামুন হিসেবে পরিচিত। নেশাখোর মামুন বললে সবাই সহজে তাকে চিনেন।

নোটিশ
শনিবার (৫ এপ্রিল) প্রথম এই কর্মসূচির আহ্বান করা হয় ‘ট্রান্সলেটিং ফালাস্তিন’ নামের একটি ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট থেকে। একাউন্টটি সাধারণত গাজায় চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কনটেন্ট পোস্ট করে থাকে। শনিবার তারা একটি ছবি পোস্ট করে যাতে ফিলিস্তিনের পতাকাসহ লেখা থাকে “দ্য ওয়ার্লড স্টপস ফর গাজা। নো ওয়ার্ক। নো স্কুল। আনটিল দ্য জেনোসাইড স্টপস।’
৭ এপ্রিল সাধারণ ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করা হয় ইংরেজি এবং আরবি দুই ভাষাতেই। পৌনে চার লাখ ফলোয়ারের এই ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট থেকে দ্রæতই ছড়িয়ে যায় এই ধর্মঘটের আহ্বান। সংহতি জানিয়ে সেই পোস্টের কমেন্টে অনেকেই জানান, তারা নিজ নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখবেন এবং কর্মক্ষেত্রে বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকবেন।
বাংলাদেশেও ‘দ্য ওয়ার্লড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচির সাথে সংহতি জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রোববার আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে সোমবার তাদের কোনো ক্লাস-পরীক্ষা হচ্ছে না। এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ এবং মিছিল করছেন রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে।
এই সংবাদের বিপরীতে গিয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজর মাদকাসক্ত, বদমেজাজি, নিজস্ব প্রয়োজনে সরকারি বিধি অমান্য করে কলেজের অর্থ লোটপাটকারী ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের স্বাক্ষরে ৬ এপ্রিল শিক্ষকদের কলেজে আসা ও উপস্থিত থাকার জন্য বাধ্যতামূলক করে নোটিশ করেন।
এ নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে পুরো কিশোরগঞ্জ শহর। নেটিজেনরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলছেন, মাদকাসক্ত, বদমেজাজি, নাস্তিক, শিক্ষার্থীদের অর্থলোটপাট কারী এই অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবী করছেন। তাছাড়াও এই অধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই মাধ্যমিক ওউচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বিধি ভঙ্গ করে করে কলেজ পরিচালনা করছেন। আওয়ামী দোসর শিক্ষকদের সাথে তার সখ্যতা বেশী লক্ষ করা যাচ্ছে। ওয়ালী নেওয়াজ খান কলেজে এখন প্রশাসনিক শৃঙ্খলাও অদৃশ্য। যা একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য বিপদজনক। আব্দুল্লাহ্ আল মামুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব প্রাপ্তির পর থেকে কলেজের অর্থ লেনদেন সুষ্ঠু তদন্ত করাও প্রয়োজন। মো. আল আমিন অধ্যক্ষ কাগজে কলমে বিদ্যমান থাকাবস্থায় নিয়মিত অধ্যক্ষের সকল অর্থনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন এই মাদকাসক্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। ২০১৮ সালে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেয়ে শিক্ষার্থীকে নেশা গ্রহনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন।
এসব বিষয়ে কথা বলতে কলেজটির অধ্যক্ষকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।
আব্দুল্লাহ আল মামুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ক্ষমতার অপব্যবহার করে যাচ্ছে। বেশ কয়েকজন শিক্ষককে চাকুরীচ্যুত করেছেন। যা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পক্ষে বিধিসম্মত নয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৩:২৯ ২৮৬ বার পঠিত