
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। প্রতিবেদনে হত্যার পেছনে ৩০ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে তদন্ত সংস্থা।
বৃহস্পতিবার প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আবু সাঈদ হত্যার তদন্ত প্রতিবেদন আমাদের কাছে জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। তদন্ত প্রতিবেদনে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে আগামী রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফর্মাল চার্জ) হিসেবে উপস্থাপন করা হবে বলে আশা করছি।’
আগামী ১৪ জুলাই এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছিল। তবে তার আগেই তদন্ত শেষে প্রতিবেদন হাতে পেয়েছে প্রসিকিউশন।
এর আগে বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই মামলার চার আসামিকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এরপর এই মামলার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন ট্রাইব্যুনাল-১।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, তখন ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ।
২৫ বছর বয়সি আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদকে পুলিশ কর্তৃক গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদেই সোচ্চার হন বহু মানুষ, যাতে আরও গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।
ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত বছরের ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ৬:৪৯:১৬ ৭ বার পঠিত