
পেহেলগাম হামলার পর প্রথমবারের মতো ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সফরে গিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে যে মন্তব্য করেছেন, তাকে “ভিত্তিহীন ও বিভ্রান্তিকর” আখ্যা দিয়ে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার এক বিবৃতিতে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্য কেবল রাজনৈতিক প্রপাগান্ডা। এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি কাশ্মীরে চলমান মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে সরিয়ে দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রী মোদি আজ কাশ্মীর সফরে গিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ রেললাইন উদ্বোধন করেন এবং সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, পাকিস্তান কেবল কাশ্মীরি আর মানবতাকেই আক্রমণ করেনি, সে দরিদ্রের রুটি-রুজিরও শত্রু। তিনি আরও বলেন, কাশ্মীরে উন্নয়নের পথে কেউ বাধা দিলে, তাদের আগে মোদির মুখোমুখি হতে হবে।
পাক পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীর এখনো একটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিরোধপূর্ণ অঞ্চল, যার চূড়ান্ত মর্যাদা নির্ধারিত হবে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব ও কাশ্মীরি জনগণের ইচ্ছার ভিত্তিতে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে যে উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে তা নিছক ঢাক ঢোল। বাস্তবে অঞ্চলটিতে নজিরবিহীন সামরিক উপস্থিতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় দমন-পীড়ন, নির্বিচারে গ্রেফতার, এবং আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থীভাবে জনসংখ্যার কাঠামো বদলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে— যা ৪র্থ জেনেভা কনভেনশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।পাকিস্তান জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে, যাতে ভারতকে জবাবদিহির আওতায় আনা হয় এবং কাশ্মীরিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার বাস্তবায়নে সহায়তা করা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, কাশ্মীরিদের ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে পাকিস্তান সর্বদা নীতিগতভাবে পাশে থাকবে। মোদির সফর এমন এক সময়ে হলো, যখন মে মাসের শুরুতে পেহেলগাম হামলার জের ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তপ্ত সামরিক সংঘর্ষ হয়। নয়াদিল্লি কোনো প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে দায়ী করে বিমান হামলা শুরু করলে, পাকিস্তান পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে এবং দুই পক্ষের বিমান ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়। এ পরিস্থিতিতে অবশেষে ১০ মে মার্কিন কূটনৈতিক হস্তক্ষেপে দুই দেশ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ৫:৪৪:২৪ ১১ বার পঠিত