
জুলাই আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক এসএম আনোয়ারা বেগমের জামিন নামঞ্জুর করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। সূত্রাপুর থানার উপ-পরিদর্শক এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একেএম মাহমুদুল কবির আনোয়ারা বেগমের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
আনোয়ারা বেগম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। এছাড়া তিনি বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সদস্য ছিলেন। ২০২২ সালে তিনি অবসর গ্রহণ করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা একেএম মাহমুদুল কবির বলেন, ‘আনোয়ারা বেগম একজন এফআইআর-এর নামযুক্ত আসামি। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যা যাচাই করা হচ্ছে। যদি তিনি জামিন পান, তাহলে তিনি চিরতরে পালিয়ে যাবেন। তাই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখা প্রয়োজন।’
আনোয়ারা বেগমের জামিন আবেদন করেন আসামি পক্ষের আইনজীবী ওবাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন,‘তিনি এই ঘটনার সাথে জড়িত ছিলেন না এবং কেবল তাকে হয়রানির জন্যই তাকে মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তাই মানবিক কারণে তাকে জামিন দেয়া উচিত।’
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে ম্যাজিস্ট্রেট আসামিপক্ষের আবেদন খারিজ করে দেন এবং তাকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে আনোয়ারা বেগমকে আটক করেন শিক্ষার্থীরা। পরে সূত্রাপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকালে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বাদী হয়ে সূত্রাপুর থানায় একটি মামলা করেন। এই মামলার ৪৩ নম্বর আসামি আনোয়ারা বেগম।’
মামলার বাদী শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লা বলেন, উনি বলতেন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যারা কাজ করে তারা রাজাকার। আর যেহেতু ছাত্রদল-শিবির আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কাজ করে, তাই এরা রাজাকার, এদের গুলি করে মারা উচিত। উনি পিএসসি এর সদস্য থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ ছাড়া কাউকে বিসিএস এর জন্য উত্তীর্ণ করতেন না। উনার মতো আওয়ামী দোসরের সঠিক বিচার দাবি করছি। কারণ উনারা ছাত্রলীগের মাফিয়াদের পুলিশ প্রশাসনে নিযুক্ত করেছেন এবং ক্যাম্পাসের ছাত্রলীগকে টাকা দিয়ে ছাত্রদলসহ অন্যান্য ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন করিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনেও উনি ছাত্রলীগকে অনেক টাকা দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, বুধবার সন্ধ্যায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বছরের ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে মাস্টার হোটেলের সামনে সুজন মোল্লার চোখে গুলি লাগে। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুজন মোল্লা বাদী হয়ে ১৯২ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪১:২৩ ৪৯ বার পঠিত