‘ইসরাইল পাগল রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে’

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » ‘ইসরাইল পাগল রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে’
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫



‘ইসরাইল পাগল রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে’

গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ যখন এক ভয়াবহ সহিংসতায় প্রবেশ করছে, তখন দেশের ভেতরে ক্রমবর্ধমানভাবে বহু মানুষ এর বিরোধিতা করছেন। বিশেষ করে ইসরাইলের এই যুদ্ধের ধরণ ও উদ্দেশ্য নিয়ে। এ খবর দিয়ে অনলাইন বিবিসি বলছে- ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)-এর সাবেক উপপ্রধান ও বামপন্থি রাজনীতিক ইয়াইর গোলান সোমবার এক মন্তব্য করে ক্ষোভের জন্ম দেন। তিনি বলেন- একসময় দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন ছিল ইসরাইল তেমনই এক পাগল রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে, যদি আমরা আবার একটি সুস্থ রাষ্ট্রের মতো আচরণে ফিরে না যাই। তিনি আরও বলেন- একটি সুস্থ রাষ্ট্র বেসামরিক মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে না, শিশুদের হত্যা করে না মজা করে এবং জনসংখ্যাকে উচ্ছেদের লক্ষ্য নির্ধারণ করে না। তিনি এই মন্তব্য করেন ইসরাইলের জনপ্রিয় রেডিওর সকালের এক সংবাদ অনুষ্ঠানে। এই মন্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন- এটি রক্ত কলঙ্ক। কিন্তু বুধবার সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও আইডিএফের চিফ অব স্টাফ মোশে বোগি ইয়ালোন আরও একধাপ এগিয়ে যান। তিনি এক্সে যুদ্ধ নিয়ে লিখেছেন, এটি কোনো শখের বিষয় নয়, বরং সরকারের নীতি। এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকা। আর এটা আমাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

মাত্র ১৯ মাস আগে, যখন হামাস বাহিনী সীমান্ত পেরিয়ে ইসরাইলে হামলা চালিয়ে প্রায় ১২০০ মানুষ হত্যা করে ও ২৫১ জনকে গাজায় অপহরণ করে জিম্মি করে তখন এ ধরনের মন্তব্য ছিল অকল্পনীয়। কিন্তু এখন গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরাইল নতুন ভয়াবহ সামরিক অভিযানে নেমেছে। তারা ১১ সপ্তাহের অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা বলেছে। কিন্তু খুব কম পরিমাণ সাহায্য সেখানে পৌঁছেছে। ইসরাইলের চ্যানেল ১২ পরিচালিত এক সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, শতকরা ৬১ ভাগ মানুষ যুদ্ধ বন্ধ করে বন্দিদের ফেরত চায়। শতকরা মাত্র ২৫ ভাগ গাজায় আক্রমণ বাড়ানোর পক্ষে। সরকার এখনও বলছে তারা হামাসকে ধ্বংস করবে ও বাকি বন্দিদের উদ্ধার করবে। নেতানিয়াহু দাবি করছেন, তিনি ‘সম্পূর্ণ বিজয়’ অর্জন করতে পারবেন এবং তার একটি শক্ত সমর্থক গোষ্ঠী এখনো আছে। কিন্তু ইসরাইলি সমাজের অন্যান্য অংশে ‘এক ধরনের হতাশা, মানসিক আঘাত এবং পরিবর্তন আনার অক্ষমতার অনুভূতি’ দেখা দিচ্ছে। এমনটাই বলছেন সাবেক বন্দি বিষয়ক আলোচক গারশন বাসকিন। তিনি আরও বলেন, প্রায় সব বন্দি পরিবারেরই মত হলো যুদ্ধ বন্ধ হতে হবে এবং একটি চুক্তি করতে হবে। একটি ছোট গোষ্ঠী মনে করে, প্রথমে হামাসকে শেষ করতে হবে, তাহলেই বন্দিরা মুক্ত হবে।

রোববার প্রায় ৫০০ প্রতিবাদকারী অনেকেই গাজায় নিহত শিশুদের ছবি ও ‘গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করো’ লেখা টি-শার্ট পরে সদেরত শহর থেকে গাজা সীমান্ত পর্যন্ত মিছিলের চেষ্টা করেন। এই মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন স্ট্যান্ডিং টুগেদার নামে ইসরাইলের ইহুদি ও ফিলিস্তিনি নাগরিকদের এক ছোট কিন্তু ক্রমবর্ধমান যুদ্ধবিরোধী সংগঠন। সড়ক অবরোধের চেষ্টা করায় নেতা আলোন-লি গ্রিন-সহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গৃহবন্দি অবস্থায় বিবিসিকে গ্রিন বলেন- আমি মনে করি এটা এখন স্পষ্ট ইসরাইলি জনগণের মধ্যে এক ধরনের জাগরণ শুরু হয়েছে। আরও অনেক মানুষ এখন অবস্থান নিচ্ছেন। সংগঠনের আরেক সদস্য উরি ওয়েল্টম্যান বলেন, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া শুধু ফিলিস্তিনি বেসামরিকদের ক্ষতি করছে না, এটি বন্দিদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে, সেনাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে, আমাদের সবার জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে। এপ্রিল মাসে হাজার হাজার ইসরাইলি রিজার্ভ সেনা এক চিঠিতে সই করে সরকারকে যুদ্ধ থামিয়ে একটি বন্দি মুক্তির চুক্তির জন্য আহ্বান জানান। তবে ইসরাইলের অভ্যন্তরে নানা দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। বুধবার গাজার কারেম শালোম সীমান্তে গিদেওন হাশাভিতের সাথে কথা বলে বিবিসি। তিনি গাজায় সাহায্য ঢুকতে না দেওয়ার প্রতিবাদে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬:২৭:৫১   ৫ বার পঠিত  




আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবি উড়িয়ে দিলেন এস জয়শঙ্কর
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের রিপোর্ট বাংলাদেশে মানুষের মৌলিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে
‘ইসরাইল পাগল রাষ্ট্রে পরিণত হচ্ছে’
অবিলম্বে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অস্ট্রেলিয়ান ৪১ আইনপ্রণেতার চিঠি
ইতিহাস গড়লেন শিবলি আলম টেমসাইডের প্রথম বাংলাদেশি নারী মেয়র
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পারমাণবিক আলোচনা নিয়ে সন্দিহান খামেনি
কিছুক্ষণের মধ্যেই ইউক্রেন ইস্যুতে পুতিনের সঙ্গে কথা বলবেন ট্রাম্প
‘চুক্তি হোক বা না হোক, ইরান পরমাণু সমৃদ্ধকরণ অব্যাহত রাখবে’
সোমালিয়ার রাজধানীতে আত্মঘাতী বোমা হামলা, নিহত ১০
অপারেশন সিঁদুর নিয়ে মন্তব্য, ভারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেপ্তার

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ