
২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ডামি নির্বাচনের আয়োজন ও ভোট চুরির অভিযোগ এনে টাঙ্গাইলে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাকসহ আরও ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় আরও পাঁচজন সাংবাদিককে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মে) মামলার নথি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এর আগে, সোমবার কামরুল হাসান টাঙ্গাইলের জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভূঞাপুর থানার আমলি আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এছাড়াও, মামলায় আসামি করা হয়েছে ডিবিসির সাংবাদিক সোহেল তালুকদার, দেশ টিভির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ, ভোরের কাগজের ভুঞাপুর প্রতিনিধি সন্তোষ দত্ত, আনন্দ টিভির প্রতিনিধি আল আমিন শোভন ও দৈনিক যুগান্তরের ভুঞাপুর প্রতিনিধি আসাদুজ্জামান বাবুল।
আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট রুমেলিয়া সিরাজাম মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন ভূঞাপুর থানার ওসিকে। মামলার বাদী কামরুল হাসান টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ভারই গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিন আহম্মেদের ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৩ জনের নাম উল্লেখসহ মামলায় অজ্ঞাত আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের তালিকায় রয়েছেন-টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের সাবেক এমপি তানভীর হাসান ছোট মনির, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী আব্দুল আওয়াল, তৎকালীন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শহিদুল ইসলামসহ পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসার, আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
মামলায় বাদী উল্লেখ করেন, বিগত ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি শেখ হাসিনা অন্য আসামিদের সঙ্গে যোগসাজশ করে একটি ডামি নির্বাচনের আয়োজন করে ভারতের নির্দেশক্রমে। বাদী কামরুল হাসান ভূঞাপুরের অলোয়া ইউনিয়নের ভারই উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটার ছিলেন। অন্য ভোটারদের সঙ্গে ওই কেন্দ্রে তিনি ভোট দিতে গেলে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তার ওপর হামলা চালায়। আসামিরা তাকে মারপিট করে এবং হত্যার হুমকিও দেয়। নির্বাচনে পুলিশ ও প্রিসাইডিং অফিসারের সহায়তায় ভোটকেন্দ্র দখল করে জোরপূর্বক নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভর্তি করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। এভাবে অন্যের ভোট চুরি করে এমপি পদে নির্বাচিত করা হয় টাঙ্গাইল-২ (ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী তানভীর হাসান ছোট মনিরকে। এতে দেশ ও জনগণের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।
বাদী পক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইল বার সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু রায়হান খান বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে এই মামলা রুজু করা হয়েছে মোট ১৯৩ জনের বিরুদ্ধে। মামলাটি আমলে নিয়ে বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক। পরে ভূঞাপুর থানার ওসিকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। আগামী ১৩ আগস্ট আদালত একইসঙ্গে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন।
মামলার আসামি দেশটিভির টাঙ্গাইল প্রতিনিধি অভিজিৎ ঘোষ বলেন, ৫ আগস্টের পর একাধিক নিউজ হয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে। এছাড়াও এ মামলায় বিএনপির নেতাদের যোগসাজশে সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে কেউ কেউ ইন্ধনও জুগিয়েছে। প্রকৃত সাংবাদিকদের দমনের জন্যে এ মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭:৩৪:৫১ ২৬ বার পঠিত