
ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হত্যাযজ্ঞের পক্ষে প্রচারণা চালানোয় সহযোগিতার অভিযোগে একাত্তর টেলিভিশন ও মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালসহ দুইজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগে একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মোস্তফাকেও আসামি করা হয়।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় অভিযোগ দাখিল করেন হেফাজতে ইসলামের নেতা মুশফিকুর রহমান। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ এর ৩(২) ও ৪(১)/৪(২) ধারা অনুযায়ী এ অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
২০১৩ সালে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আব্দুল কাদের মোল্লাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সেই রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবি জানায় ‘গণজাগরণ মঞ্চ’। গণজাগরণ মঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন ডা. ইমরান এইচ সরকার, অমি রহমান পিয়াল, আরিফ জেবতিক, বাপ্পাদিত্য বসু, লাকি আক্তারসহ একদল ব্লগার-অ্যাক্টিভিস্ট। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতের কয়েকজন শীর্ষ নেতার ফাঁসি হওয়া পর্যন্ত এই মঞ্চ বেশ সক্রিয় ছিল।
ধর্মপ্রাণ লোকজনরা অভিযোগ করেন, এই মঞ্চের সঙ্গে জড়িতদের অনেকে ইসলামবিদ্বেষী ব্লগিং করছেন। এই আন্দোলনকে ঘিরে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন সংগঠন ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র।
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ইসলামের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানোর প্রতিবাদ জানাতে হেফাজতে ইসলাম সমাবেশ ডাকে। পরে তারা সেখানে অবস্থানের ঘোষণা দেয়। তাদেরকে সেখান থেকে সরাতে রাতে সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ, র্যাব, ডিবিসহ নিরাপত্তা বাহিনী। ওই রাতে নৃশংস অভিযানে বহু লোককে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করে হেফাজত।
মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’-এর ভাষ্যমতে, ৬১ জন লোক সেদিন মারা যায়। যদিও সেই প্রতিবেদনের কারণে ‘অধিকার’ সম্পাদক আদিলুর রহমান খানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেন সাইবার ট্রাইব্যুনাল। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারে আদিলুর রহমান খান উপদেষ্টার দায়িত্বে আছেন।
সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গোয়েন লুইসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শাপলা চত্বরে চালানো ক্র্যাকডাউনসহ বিগত সরকারের শাসনামলের বিচারবর্হিভূত সব হত্যাকাণ্ড নথিভুক্ত করতে জাতিসংঘকে অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০:১৪:০৭ ৭৮ বার পঠিত