বিদায় সংবর্ধনায় বিচারপতি জিয়াউল করিম বিচার বিভাগে দুর্নীতির অপপ্রচার কানে আসে

প্রথম পাতা » জাতীয় » বিদায় সংবর্ধনায় বিচারপতি জিয়াউল করিম বিচার বিভাগে দুর্নীতির অপপ্রচার কানে আসে
বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪



বিচার বিভাগে দুর্নীতির অপপ্রচার কানে আসে

বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় সংবিধান অনুসারে অবসরে গেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম।

বুধবার বিদায় সংবর্ধনায় তিনি বলেছেন, বিচার বিভাগে দুর্নীতির কালো মেঘ ভেসে বেড়াচ্ছে, এমন অনাকাঙ্ক্ষিত অপপ্রচার আজকাল প্রায়ই কানে আসে। বিচারব্যবস্থায় কারও একক অধিকার নেই। কারও একক প্রয়াসেও তা চলতে পারে না। সমষ্টিগত প্রয়াসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একমাত্র পূর্বশর্ত। তাই বিচারক থেকে শুরু করে বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত সবারই একে অপরের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে।

বুধবার আপিল বিভাগের ১ নম্বর বিচারকক্ষে (প্রধান বিচারপতির এজলাস) বেলা সাড়ে ১১টার পর এই বিদায় সংবর্ধনা হয়। এ সময় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও আপিল বিভাগের অপর বিচারপতিরা বেঞ্চে ছিলেন।

১৯৫৭ সালের ১২ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করা আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিমের ৬৭ বছর পূর্ণ হচ্ছে বুধবার। শেষ কর্মদিবসে প্রথা অনুসারে তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানানো হয়। সংবর্ধনায় প্রথমে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান ও পরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন বিদায়ি বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিমের কর্মময় জীবন তুলে ধরে বক্তব্য দেন।

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম বলেন, সুবিচার বা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হলে বিচারালয়ের সর্বনিম্ন কর্মকর্তা থেকে সর্বোচ্চ পদধারীকেও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। একজন বিচারক সুচিন্তিত মতামত প্রকাশের জন্য বাধাবিপত্তির সম্মুখীন হলে তা প্রতিহত করতে এ অঙ্গনে যাদের কল্যাণকর পদচারণা, তাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা মোকাবিলা করতে হবে।

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম বলেন, ‘একটি পরিবারের গৃহকর্তা যেমন তার পরিবারের সবাইকে একত্র রেখে রক্ষা করেন, আবার শাসনও করেন, ঠিক সেরকমভাবে সিনিয়র বিচারকরাও পরিবারের অভিভাবকের মতো জুনিয়র বিচারকদের ভালোবাসবেন, স্নেহ করবেন, দিকনির্দেশনা দেবেন, এটাই কাম্য। তাদের আগলে রেখে পথ দেখাতে হবে, যাতে তারা সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথভাবে পালন করেন। তা না হলে বিচারব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত দু-একজনের পদস্খলনে পুরো বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। একবার যদি বিচারব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তাহলে যে কোনো সময় অপশক্তি আমাদের দেশ ও সভ্যসমাজকে গ্রাস করবে।’

বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম বলেন, “আজ বিদায়বেলায় আপনাদের কাছে আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ, আমরা যেন এমন কিছু না করি, যাতে সুবিচারের প্রতীক এই শ্বেতশুভ্র অট্টালিকার গায়ে বিন্দুমাত্র কালিমা লাগে। আমাদের মনে বেজে না ওঠে ‘মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি’।”

আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসাবে ১৩ আগস্ট শপথ নেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হন। ২ বছর পর স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ পান তিনি। রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর আইনে এলএলবি, এলএলএম ও পিএইচডি অর্জন করেন বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম। তিনি ১৯৮৬ সালে জেলা আদালতে, ১৯৮৮ সালে হাইকোর্ট বিভাগে ও ১৯৯৬ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত হন।

বাংলাদেশ সময়: ৩:১৮:৫৩   ১৮০ বার পঠিত  




জাতীয়’র আরও খবর


আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ
উপদেষ্টা পরিষদে অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন গুমের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড
নোট অব ডিসেন্টের মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছানোই সভ্য গণতান্ত্রিক পথ: তারেক রহমান
বিচার বিভাগকে সময়ের সঙ্গে প্রাসঙ্গিক হতে হয়: প্রধান বিচারপতি
সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে প্রতারণা, সতর্ক করলো পুলিশ
হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য শেষ, বাদীর জেরা ১০ নভেম্বর
সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট
সাবেক মন্ত্রী মায়া ও পরিবারের ৮১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ
বিচারপতি খুরশীদ আলম সরকারকে অপসারণ
তিন শতাধিক বিচারককে জেলা জজ হিসেবে পদোন্নতির সিদ্ধান্ত

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ