মুসলিম বিশ্বের আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে ইসরাইল: গবেষণা

প্রথম পাতা » আন্তর্জাতিক » মুসলিম বিশ্বের আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে ইসরাইল: গবেষণা
শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫



মুসলিম বিশ্বের আকাশপথ অবরোধে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখীন হবে ইসরাইল: গবেষণা

আরব এবং মুসলিম দেশগুলো আকাশপথে অবরোধ দিলে ভয়াবহ ক্ষতির সম্মুখিন হবে ইসরাইলের অর্থনীতি। সংযুক্ত আরব আমিরাত ভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাংকের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য। গবেষণাটি করেছে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা সংস্থা আল হাবতুর রিসার্চ সেন্টার। ৯ সেপ্টেম্বর কাতারের দোহায় ইসরাইলি হামলার পর এই গবেষণা প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। আল হাবতুরের তরফে বলা হয়েছে, ইসরাইলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় আকাশে সমন্বিত অবরোধ দিলে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে তেল আবিব। এ খবর দিয়েছে মিডলইস্ট আই।

এতে বলা হয়, কাতারের রাজধানী দোহায় ইসরাইলের হামলার পর গত সোমবার অরগানাইজেশন অব ইসলামিক কোঅপারেশনের (ওআইসি) ৫৭টি দেশ এবং আরব লীগের যৌথ উদ্যোগে একটি জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ইসরাইলি হামলার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন মুসলিম বিশ্বের নেতারা। তেল আবিবের হামলায় অন্তত ছয়জন নিহত হন। যার মধ্যে কাতারের প্রতিরক্ষা বিভাগের একজন কর্মকর্তাও ছিলেন।

আল হাবতুরের রিপোর্ট বলছে, মুসলিম বিশ্ব একজোট হয়ে যদি ইসরাইলের জন্য তাদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় তাহলে দেশটির জিডিপি ৫ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমে ৪ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসবে। ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দার সূচনা হতে পারে। তুরস্ক, পাকিস্তান এবং ইন্দোনেশিয়ার মতো ওআইসি-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলো যদি ইসরাইলের সরাসরি ফ্লাইটগুলো বন্ধ করে দেয় তাহলে দেশটির জন্য এশিয়া ও আফ্রিকার উচ্চ প্রবৃদ্ধির বাজারে বড় বাধা তৈরি হবে। উল্লিখিত আকাশসীমা বন্ধ হয়ে গেলে ইসরাইলি এয়ার পরিবহনগুলোকে চার থেকে ছয় ঘণ্টা অতিরিক্ত সময় গুনতে হবে। ফলে প্রতি ফ্লাইটে ৩০ থেকে ৬০ হাজার ডলার অতিরিক্ত খরচ হবে। এতে ইসরাইলের বিমান সংস্থা এল আলের রাজস্বে বড় টান পড়বে। সম্ভবত ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ রাজস্ব হারাবে বিমান সংস্থাটি।

রিপোর্ট অনুযায়ী মুসলিম দেশগুলোর এমন পদক্ষেপ ইসরাইলের পর্যটন খাতে ধ্বস নামাতে পারে। এছাড়া চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং মূল্যবান রত্ন আমদানিতেও বাড়তি সময় এবং খরচের প্রয়োজন হবে। এমন চাপে পড়লে ইসরাইলের সঙ্গে অন্যান্য দেশগুলোর চুক্তিও বাতিল হতে পারে এবং তেল আবিব-ভিত্তিক গবেষণা এবং উন্নয়ন উদ্যোগও ব্যাহত হতে পারে। অর্থনৈতিক পরিণতির বাইরেও ওই রিপোর্টে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, যদি এমন পদক্ষেপ নেয়া হয় তা হবে যুগান্তকারী এবং সাহসী উদ্যোগ। এতে ভূ-রাজনীতির আঞ্চলিক কৌশলেও অনেক পরিবর্তন আসবে।

এখানে আরেকটি লক্ষণীয় বিষয় হলো কাতারসহ অন্যান্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের ৮ হাজারের বেশি সৈন্য থাকা সত্ত্বেও সেখানে ইসরাইলকে হামলা থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হয়েছে ওয়াশিংটন। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর কৌশলগত অংশীদারিত্বও এখন প্রশ্নের মুখে পড়েছে। আল হাবতুর বলছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাষ্ট্র এবং আরব দেশগুলো যদি ইসরাইলকে লক্ষ্য করে আকাশসীমা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে তা মধ্যপ্রাচ্য তথা গোটা অঞ্চলের জন্য নতুন প্রতিরক্ষা কৌশলের দ্বার উন্মোচন করবে। এতে কূটনৈতিক সংকটে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র। এর মাধ্যমে ওয়াশিংটনকে আরব বিশ্ব অথবা ইসরাইলের যে কোনো একটি অংশকে বেছে নেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

ইতিমধ্যেই নিঃসঙ্গ হতে শুরু করেছে ইসরাইল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বক্তব্যেই এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। গত সপ্তাহে এক ভাষণে তিনি বলেন, বিশ্ব মঞ্চে বেশ একলা হয়ে পড়েছে ইসরাইল। এক্ষেত্রে এখন নিঃসঙ্গ অর্থনীতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:২৫   ৩৬ বার পঠিত  




আন্তর্জাতিক’র আরও খবর


কিয়েভে রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, নিহত ৪
গাজা যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ২১ দফা শান্তি প্রস্তাব
বিজয়ের সমাবেশে পদদলিত হয়ে হতাহত: যা যা জানা গেল
পারমাণবিক কূটনীতি ভেস্তে যাওয়ায় ইরানের ওপর ফের জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফয়সালকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্কটিশ লেবার পার্টি
গাজায় বিদেশি সাংবাদিক প্রবেশের অনুমতির জন্য ইসরাইলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চলচ্চিত্র প্রকাশ
জাতিসংঘে ভাঙা রেকর্ডটাই বাজালেন নেতানিয়াহু বিশ্ব নেতাদের ওয়াক আউট
পশ্চিম তীরে জাতিসংঘ কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত দেড়শতাধিক কোম্পানির বাণিজ্য
উত্তপ্ত লাদাখ, গ্রেপ্তার আন্দোলনের নেপথ্য নায়ক সোনম ওয়াংচুক
গাজায় হামলা তীব্রতর আরব-মুসলিম নেতাদের সঙ্গে আজ বৈঠক ট্রাম্পের

Law News24.com News Archive

আর্কাইভ