
জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় ইমাম হাসান ভূঁইয়া তাইমকে পুলিশের তৎকালীন এডিসি শামীম, ওসি জাকির হোসেন ও উপপরিদর্শক সাজ্জাদুজ্জামান গুলি করেছিলেন বলে জবানবন্দি দিয়েছেন ইমাম হাসানের বড় ভাই রবিউল আওয়াল ভূঁইয়া।
সোমবার (১৮ আগস্ট) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলায় ১১ নম্বর সাক্ষী হিসেবে এ জবানবন্দি দেন তিনি।
এ মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন আসামি। এর মধ্যে দায় স্বীকার করে নিয়েছেন সাবেক আইজিপি মামুন। সেই সঙ্গে তিনি এ মামলায় ‘রাজসাক্ষী’ (দোষ স্বীকার করে ঘটনার সত্য বিবরণ প্রকাশ করেন যে আসামি) হয়েছেন।
জবানবন্দিতে রবিউল আওয়াল ভূঁইয়া বলেন, ২০ জুলাই দুপুর ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিল। সেদিন ইমাম হাসান মাকে চা খাওয়ার কথা বলে বাইরে গিয়ে আন্দোলনে অংশ নেয়। যাত্রাবাড়ীর কাজলা পদচারী–সেতুর পাশে ইমাম হাসানকে গুলি করা হয়। যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক সাজ্জাদুজ্জামান প্রথম ইমাম হাসানের পায়ে গুলি করেন। পরে এডিসি শামিম আরেকজনের হাত থেকে অস্ত্র নিয়ে তার শরীরের নিচের দিকে গুলি করেন। তারপর ওসি তদন্ত জাকির হোসেন অনেকবার গুলি করেন। ঘটনাস্থলে তখন যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী ও প্রলয়, ডিসি ইকবাল, এডিসি মাসুদুর রহমান মনির, এসি নাহিদ, এসি তানজিল, ওসি আবুল হাসান, ওসি অপারেশন ওয়াহিদুল হক মামুনসহ ১০–১৫ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন।
জবানবন্দিতে রবিউল আরও বলেন, ঘটনাস্থলে ইমাম হাসান আধা ঘণ্টা পড়ে ছিল। পরে পুলিশ ভ্যানে করে তাকে যাত্রাবাড়ী থানার সামনে নেওয়া হয়। সেখানে ভ্যান থেকে মাটিতে নামিয়ে পাঁচ-ছয়জন পুলিশ সদস্য বুট জুতা দিয়ে মাড়িয়ে তার চেহারা বিকৃত করে ফেলেন। তাদের মধ্যে ছিলেন এডিসি শামীম, এডিসি মাসুদুর রহমান মনির, এসি নাহিদ। পরে কেউ তাকে ভ্যানে করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের জ্যেষ্ঠ উপপরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে ইমাম হাসান। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে গত ২০ জুলাই ইমাম হাসান যাত্রাবাড়ীর কাজলা পদচারী–সেতুর কাছে মারা যান। ইমাম নারায়ণগঞ্জের সরকারি আদমজী নগর এমডব্লিউ কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৪৩:৩৫ ৬৬ বার পঠিত