
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে অবস্থিত একটি বিমানঘাঁটিতে সৈন্য মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। ইসরাইল ও সিরিয়ার মধ্যে নিরাপত্তা চুক্তি বাস্তবায়নে সহায়তার অংশ হিসেবে এ পদক্ষেপ নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জ্ঞাত ছয়টি সূত্রের মাধ্যমে এ বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, এই পরিকল্পনা এখনো প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়নি। তবে এটি সিরিয়ার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কৌশলগত পুনর্মিলনের একটি বড় ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। বিশেষ করে গত বছর সাবেক প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের পর দামেস্কে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি ইরানের জন্য হুমকি স্বরূপ দেখছেন পর্যবেক্ষকরা। সিরিয়াতে ইরানের সর্বশেষ মিত্র ছিল ক্ষমতাচ্যুত আসাদ।
বিমানঘাঁটিটি দক্ষিণ সিরিয়ার একটি কৌশলগত অঞ্চলে অবস্থিত। যা ভবিষ্যতে নিরস্ত্রীকরণ অঞ্চল হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অঞ্চলকে ঘিরেই যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন চুক্তির মূল কাঠামো তৈরি হচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প আগামী সোমবার হোয়াইট হাউসে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। যা সিরিয়ার কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের ঘটনা হবে।
রয়টার্স জানিয়েছে, পশ্চিমা দুই কর্মকর্তা ও এক সিরীয় প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাসহ ছয়টি সূত্র নিশ্চিত করেছে যে, মার্কিন সেনারা বিমানঘাঁটিটি ব্যবহার করবে ইসরাইল-সিরিয়া চুক্তির নজরদারির কাজে। পেন্টাগন ও সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এক মার্কিন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেছেন, আমরা সিরিয়ায় আমাদের অবস্থান সব সময় পুনর্মূল্যায়ন করছি। যাতে আইএস মোকাবেলায় কার্যকর থাকতে পারি। তবে আমরা সামরিক ঘাঁটির অবস্থান বা সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে মন্তব্য করি না।
পশ্চিমা এক সামরিক কর্মকর্তা জানান, গত দুই মাস ধরে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ (পেন্টাগন) কয়েক দফা রেকনেসান্স মিশন চালিয়েছে এবং ঘাঁটির রানওয়েকে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবহারের উপযোগী ঘোষণা করেছে।
সিরিয়ার দুইটি সামরিক সূত্র জানায়, ঘাঁটিটি লজিস্টিকস, নজরদারি, জ্বালানি সংগ্রহ এবং মানবিক কার্যক্রমে ব্যবহারের বিষয়ে কারিগরি আলোচনা চলছে। তবে সিরিয়া ঘাঁটির ওপর পূর্ণ সার্বভৌমত্ব বজায় রাখবে।
একজন নিরাপত্তারক্ষী রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মার্কিন সামরিক সি-১৩০ পরিবহন বিমানের কয়েকটি পরীক্ষামূলক অবতরণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে।
এই পরিকল্পনাটি ওই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের গড়ে তোলা আরও দুইটি নতুন সামরিক উপস্থিতির প্রতিফলন। যার একটি লেবাননে। যেখানে হিজবুল্লাহ ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধবিরতির পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়। আরেকটি ইসরাইলে, যা হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসন-সমর্থিত চুক্তির তত্ত্বাবধানে রয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় অবস্থান করছে। যেখানে আইএস মোকাবেলায় তারা স্থানীয় কুর্দি নেতৃত্বাধীন বাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট শারা জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো সামরিক উপস্থিতি নতুন রাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তির ভিত্তিতেই হবে। সিরিয়া শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক আইএস-বিরোধী জোটে যোগ দিতে পারে বলেও জানিয়েছে সূত্র।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩২:২৫ ১৪ বার পঠিত