
তালেবান সরকারের কাছে আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার ট্রাম্প জানান, তার প্রশাসন আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত চায়। চীনকে মোকাবিলায় কৌশলগত কারণে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এই ঘাঁটিটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় তা পুনরায় ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন ট্রাম্প। তবে তালেবান সরকার তার আহ্বান আনুষ্ঠানিকভাবে নাকচ করে দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
এতে বলা হয়, শুক্রবার আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, কাবুল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে প্রস্তুত তবে পুনরায় মার্কিন সেনার উপস্থিতি মানতে রাজি নয়। এর আগে ট্রাম্প বলেছেন, আমরা বিমানঘাঁটিটি ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করছি। কেননা সেটা আমরা তালেবানদের বিনামূল্যে দিয়েছি। ট্রাম্পের অভিযোগ বাগরমা চীনের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির কারখানা থেকে মাত্র এক ঘন্টা দূরে অবস্থিত। তাই চীনকে মোকাবিলায় ঘাঁটিটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্প মনে করেন এভাবে বাগরাম থেকে মার্কিন সৈন্য সরিয়ে নেয়া উচিত হয়নি।
২০২১ সালে আশরাফ গণির সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা নেয় তালেবান। ওই সময় বাগরাম ঘাঁটি থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়ে দিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের প্রয়োজন আছে, তবে সেটা আফগানিস্তানে মার্কিন সেনার অনুপস্থিতিতে হতে হবে। তালেবান সরকার পারস্পরিক স্বার্থ এবং শ্রদ্ধার ভিত্তিতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক রাখতে চায় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাকির জালাল।
কাবুলের ঠিক উত্তরে অবস্থিত এই বাগরাম বিমানঘাঁটি। সেখানে একটি কুখ্যাত কারাগার ছিল। বাগরাম ঘাঁটিতে মার্কিন সেনারা দুই দশকের বেশি সময় অবস্থান করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাস বিরোধী যুদ্ধ চলাকালীন ওই স্থানে নির্বিচারে হাজার হাজার ব্যক্তিকে আটক রাখা হয়। যাদের অনেককে ভয়াবহ নির্যাতন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
বাগরাম বিমানঘাঁটি থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়ায় বারবার আফসোস করেছেন ট্রাম্প। তার মতে ওয়াশিংটনকে আফগানিস্তানের কারণে নয়, বরং চীনের কাছাকাছি অবস্থানের কারণে সেখানে মার্কিন সেনাদল রাখা উচিত ছিল। সর্বশেষ মন্তব্যগুলো আসে যখন ট্রাম্প প্রথমবারের মতো নিশ্চিত করেছেন যে তার প্রশাসন তালেবান কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করছে। গত সপ্তাহে, ট্রাম্পের বিশেষ প্রতিনিধী অ্যাডাম বোহলার এবং আফগানিস্তানের জন্য সাবেক মার্কিন প্রতিনিধি জিলমেই খালিলজাদ কাবুলে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। আফগানিস্তানে আটক মার্কিন নাগরিকদের নিয়ে আলোচনা করেন তারা।
মার্কিন কর্মকর্তারা মার্চ থেকেই বাগরামে পুনরায় উপস্থিতি নিশ্চিত করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করছেন। ট্রাম্প ও তার প্রশাসন যুক্তি দিয়েছেন যে, বাগরাম বিমানবন্দরটি শুধুমাত্র নিরাপত্তার ওপর নয়, আফগানিস্তানের মূল্যবান খনিজ সম্পদে প্রবেশের জন্যও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:৫৯ ৩৯ বার পঠিত