
মার্কিন গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ইরান গত মাসে পারস্য উপসাগরে নিজেদের নৌযানে নৌ-মাইনবোঝাই করেছিল। এটা ইঙ্গিত দেয় যে তেহরান হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। ইরানে ইসরাইল চালানো হামলার পর এই পদক্ষেপ নেয়া হয় বলে দাবি করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। হরমুজ প্রণালী মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম কৌশলগত সামুদ্রিক পথ। ওমান এবং ইরানের মাঝ দিয়ে পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সঙ্গে সংযুক্ত করেছে এই পথ। দৈনিক প্রায় ২০ শতাংশ বৈশ্বিক তেল ও গ্যাস এই প্রণালী দিয়েই সরবরাহ হয়। মাইন বসানো হলে এই রুট কার্যত অচল হয়ে পড়তো। ফলে বিশ্ববাজারে জ্বালানি সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা ছিল।
মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই মাইনগুলো প্রণালীতে বসানো হয়নি। কিন্তু ইরানের এই প্রস্তুতি বাস্তব হুমকি তৈরি করেছিল। তবে তারা এটাও বলছেন, এটি হয়ত একটি কৌশলগত তৎপরতা হতে পারে- যাতে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে তেহরান প্রণালী বন্ধ করবে, অথচ সেটি না করে কূটনৈতিক বা সামরিক সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করা যায়। যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে এই তথ্য পেয়েছে তা স্পষ্ট করা হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে উপগ্রহ চিত্র ও গোপন গোয়েন্দা তথ্যের মাধ্যমে এই তথ্য পাওয়া গেছে। হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রেসিডেন্টের অপারেশন ‘মিডনাইট হ্যামার’-এর সঠিক ও সাহসী বাস্তবায়নের ফলে হরমুজ প্রণালী এখনো উন্মুক্ত আছে। নৌ চলাচলের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে এবং ইরান কৌশলগতভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছে। পেন্টাগন বা জাতিসংঘে ইরানের প্রতিনিধির দপ্তর এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
এ ঘটনা ঘটেছে ১৩ জুন ইরানের উপর ইসরাইলের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরপরই। ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালায়। এর পর ইরানের পার্লামেন্ট হরমুজ প্রণালী বন্ধ করার প্রস্তাব পাস করে, যদিও তা বাধ্যতামূলক ছিল না। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার ইরানের সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের হাতে। ২০১৯ সালের মার্কিন সামরিক গোয়েন্দা রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরানের হাতে ৫,০০০ এর বেশি নৌ-মাইন রয়েছে। যা উচ্চগতির ছোট নৌকা দিয়ে দ্রুত বসানো সম্ভব। যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহর বাহরাইনে অবস্থানরত। ওই অঞ্চলে মাইন নিষ্ক্রিয়কারী জাহাজ রেখেছে। তবে ইরানের সম্ভাব্য প্রতিশোধমূলক হামলার আশঙ্কায়, এসব জাহাজ গত সপ্তাহে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২:১৩:০৯ ১৫ বার পঠিত