
যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগোতে ২০২৩ সালের অক্টোবরে ছয় বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে ছুরিকাঘাতে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দোষী সাব্যস্ত হওয়া ৭৩ বছর বয়সী জোসেফ জুবাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
আদালতের রেকর্ড অনুযায়ী, প্রসিকিউটররা বলেন, মুসলিমবিরোধী বিদ্বেষ থেকে প্ররোচিত হয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। ওই ব্যক্তি শিশুটির মাকেও গুরুতর আহত করেছিল।
শিশু ওয়াদিয়া আল-ফায়ুমের এই হত্যাকাণ্ড এবং তার মা হানান শাহীনের ওপর হামলা ছিল গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিম-বিদ্বেষী ঘৃণ্য অপরাধের প্রথম এবং সবচেয়ে খারাপ ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্রে বাড়িওয়ালার হামলায় সন্তান হারানোর ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন মুসলিম মাযুক্তরাষ্ট্রে বাড়িওয়ালার হামলায় সন্তান হারানোর ভয়াবহ বর্ণনা দিলেন মুসলিম মা
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হানান ও তার ছেলের ওপর হামলাকারী জোসেফ জুবা ছিলেন তাদের বাড়িওয়ালা। ৭ ইঞ্চির সামরিক স্টাইলের ছুরি দিয়ে তিনি শিশুটিকে ২৬ বার আঘাত করেন। শিকাগো থেকে প্রায় ৪০ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে প্লেইনফিল্ড টাউনশিপে ঘটে যাওয়া এই হামলার সময় হানানের শরীরে একাধিক ছুরিকাঘাত করা হয়।
এর আগে, চলতি সপ্তাহে বিচার চলাকালীন হানান সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, হামলার সময় তিনি জরুরি নাম্বারে কল করে বলেছিলেন, ‘বাড়িওয়ালা আমাকে এবং আমার বাচ্চাকে হত্যা করছে!’ তিনি একাধিকবার চিৎকার করে বলেন, ‘অন্য ঘরে আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলছে।’
আদালতের রেকর্ডে তিনি সাক্ষ্য দেন, জোসেফের থেকে বাসা ভাড়া নেওয়ার দুই বছরে কোনো সমস্যা হয়নি। তারা বাড়িতে জোসেফদের একটি রান্নাঘর এবং বসার ঘর শেয়ারও করত। তবে গাজায় যুদ্ধ শুরু হলে জোসেফ শাহীনের পরিবারকে সেখান থেকে সরে যেতে বলেন। জোসেফ জানান, ‘এখানে মুসলিমদের থাকতে দেওয়া হবে না’। এ সময় শাহীন জোসেফকে ‘শান্তির জন্য প্রার্থনা করার’ আহ্বান জানান। কিন্তু জোসেফ রেগে গিয়ে তাকে চেপে ধরে ছুরিকাঘাত করেন।
হানান শাহীন বলেন, জোসেফ আমাকে বলেছিলেন, ‘একজন মুসলিম হওয়ায় তোমাকে মরতে হবে।’ এ সময় তিনি ভয় পেয়ে দৌড়ে বাথরুমে ঢুকে পড়েন এবং সারা শরীর ও রুমে রক্ত দেখতে পান। অন্য একটি রুমে ছেলের চিৎকার শুনে তিনি ৯১১ নম্বরে ফোন করেন।
এদিকে, সেদিন শুনানির সময় জোসেফকে কোনো কথা বলতে দেখা যায়নি। মঙ্গলবার শুরু হওয়া এই বিচার চলাকালে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে সাক্ষ্যও দেননি তিনি। এরপর উইল কাউন্টি পাবলিক ডিফেন্ডার কাইলি ব্লাটি জুরিদের প্রতিটি প্রমাণ সাবধানতার সঙ্গে বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ৪:৪৩:৩৯ ৮৮ বার পঠিত