
রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় শাহিনুর বেগম নামে এক নারী হত্যা মামলায় গ্রেফতার সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ইকবাল বাহারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
শনিবার শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালত এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার ইনস্পেকটর কাজী রমজানুল হক আসামিকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী মোর্শেদ আলম শাহিন, স্বপ্না খানম তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন।
শুনানিতে আইনজীবীরা বলেন, হত্যা মামলায় কাউকে গ্রেফতার করতে হলে কিছু কারণ থাকতে হবে। আসামিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ মামলায় জড়ানো হয়েছে। যাকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। আসামি পুলিশের একজন সাবেক আইজি। অসুস্থ ব্যক্তি। এ মামলার সঙ্গে কোনো সম্পৃক্ততা নেই। সব আসামি আইনের দৃষ্টিতে সমান। একই ক্যাটাগরির মামলায় সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী জামিন পেয়েছেন। গ্রেফতারের একদিনের মাথায় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও জামিন পেয়েছেন। তাই যে কোনো শর্তে আসামির জামিনের প্রার্থনা করছি। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। পরে উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
রাজধানীর বেইলি রোডের একটি বাসা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যায় ইকবাল বাহারকে গ্রেফতার করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। তিনি এ মামলার এজাহারনামীয় ২৬নং আসামি।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত বছরের ৫ জুন সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা আরোপ নিয়ে বৈষমাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু করেন সারা দেশে সর্বস্তরের শিক্ষার্থীরা। এ আন্দোলন নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা, নাতিপুতি সম্বোধন করলে এর প্রতিবাদ জানিয়ে দেশব্যাপী শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের ডাক দেন। এ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন প্রতিহত করতে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ও উসকানিমূলক বক্তব্য ও নির্দেশ দিয়ে শিক্ষার্থীদের নিধনের ঘোষণা দেন।
আরও বলা হয়, গত বছরের ২২ জুলাই যাত্রাবাড়ী থানার কাজলা ফুটওভার ব্রিজের নিচে ছাত্ররা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেন। সাধারণ ছাত্রদের কর্মসূচি চলাকালে মামলার এজাহারনামীয় আসামিদের নির্দেশে অন্য আসামিরা আন্দোলকারীদের ওপর দেশীয় অস্ত্রসহ, সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ায় শেল, রাবার বুলেট নিক্ষেপ ও গুলি করে। ওই আন্দোলনে ভিকটিম শিক্ষার্থীদের পানি সরবরাহ করার সময় মাথায় গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক মাস ৯ দিন পর তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় ভিকটিমের মেয়ে হাবেজা আক্তার বাদী হয়ে শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ করে ২৯৭ জনের নামে মামলাটি করেন। মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩৮:৪৫ ২৩ বার পঠিত